নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার নন্দীগ্রামে গ্রাম্য শাসনের নামে ২৮ বছর বয়সি এক যুবতী মেয়েকে বাড়ি থেকে জোর করে তুলে নিয়ে মারধর সহ নির্যাতন করেছে মহল্লাবাসী এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ৪নং ইউনিয়নের দাড়িয়াপুর গ্রামে।ভুক্তভোগী যুবতী দাড়িয়াপুর গ্রামের আসাদ আলীর মেয়ে। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৮ই সেপ্টেম্বর) ভুক্তভুগী যুবতী বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ ও গ্রামবাসীর কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, গত বুধবার স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় স্বামীকে তালাক দেন আসাদ আলীর যুবতী মেয়ে। ঘটনাটি জানাজানি হবার পর মহল্লাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে রাত ১০টায় আসাদ আলীর মেয়েকে বাড়ি থেকে টেনে হিছড়ে তুলে এনে গ্রাম্য শাসনের নামে অমানবিক মারধর সহ নির্যাতন করে। মেয়েকে বাঁচাতে আসাদ আলীর স্ত্রী এগিয়ে আসলে তাকেও মারধর করে। এমনকি রাতেই মহল্লাবাসীরা আসাদ আলী সহ তার স্ত্রী মেয়েকে মহল্লা থেকে বের করে দেয়। পরে খবর পেয়ে গ্রাম্য পুলিশ শহিদুল ইসলাম যুবতীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দেয়। পরের দিন সকালে থানায় এসে অভিযোগ করেন মারধরের শিকার যুবতী।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ও তাদের পরিবারের লোকজন জানায়, মহল্লার পরিবেশ নষ্ট করে ফেলেছে মেয়েটি এর মধ্যে মহল্লার লোকজনকে না জানিয়ে স্বামীকে তালাক দেয়ায় মহল্লার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে শাসন করেছে আর মহল্লাবাসীর পক্ষ থেকে তার চাচা আব্দুল আলিম তাকে মারধর করেছে। তবে মারধর ও নির্যাতনের শিকার যুবতী বলছেন সে আমার রক্তের কেউ না, মহল্লার লোক। তারা মহল্লায় বিচার বসিয়ে আমাকে বাড়ি থেকে টেনে হিছরে নিয়ে গিয়ে মারধর করেছে, আমার পোশাক আশাক ছিড়ে ফেলে।

আমার মা বাঁচাতে আসলে তারা মা কেও মারধর সহ নির্যাতন করেছে। মারধরের শিকার যুবতীর মা জানান, যখন জানতে পাড়ি আমার মেয়ের নামে বিচার বসিয়েছে, তখন ভয়ে মেয়েকে ও মেয়ের বাবাকে ঘরে তালা বন্দী করে রাখি মহল্লার কয়েকজন যুবক আমার কাছ থেকে চাবি কেরে নিয়ে দরজা খুলে মেয়েকে টেনে হিচড়ে নিয়ে গিয়ে বিচারে মারধর করেছে। এমনকি আমাদের মহল্লা থেকে বের করে দিয়েছে।

ঘটনার বিষয়ে গ্রামের গ্রাম্য পুলিশ শহিদুল ইসলাম বলেন, শাসন বিচারের নামে অভিযুক্তরা যে কাজ করেছে তা সম্পূর্ন আইন বিরোধী নারীর অধিকার হরণ। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বলেন, কাউকে না জানিয়ে স্বামীকে তালাক দেয়ার অপরাধে মহল্লার লোকজন শাসন বিচারের নামে আসাদ আলীর ২৮ বছরের যুবতী মেয়েকে টেনে হিছরে এনে মারধর সহ নির্যাতন করেছে শুনেছি।

ঘটনাটি দুঃজনক। নারী নির্যাতন বন্ধে সরকার যখন কঠোর অবস্থানে, ঠিক সেই মূহুর্তে শাসন বিচারের নামে যুবতীকে মারধর ও নির্যাতন এক জঘন্যতম শাস্তি যোগ্য অপরাধ। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন।

অভিযোগের বিষয়ে নন্দীগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আনোয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।